Bengal Addaa

HMPV ভাইরাস আসলে কি

HMPV ভাইরাস আসলে কি? আসল সত্যি জানুন, করোনার মতো কি ভারতে ছড়িয়ে পড়বে?

Facebook
Twitter
WhatsApp
Telegram

কোরোনার বছর পাঁচেক পরে আবারো প্রতিবেশী রাষ্ট্র চীন থেকে একটা নতুন ভাইরাস খোঁজ পাওয়া গিয়েছে, যার নাম HMPV বাহ ইউ মিন মেটানিউমো ভাইরাস (HMPV ভাইরাস আসলে কি)। চীনে সতর্কতা জারি হওয়ার পরপরই ভারতবর্ষে আমেদাবাদ, বেঙ্গালুরু থেকে শুরু করে কলকাতাতেও এই ভাইরাসের আক্রান্ত শিশুর খোঁজ পাওয়া গেছে। তবে কি আবারো ভারতবর্ষে ছড়িয়ে পড়তে চলেছে একটি নতুন ভাইরাস ? আবার কি শুরু হতে পারে দেশজুড়ে লোকডাউন ? কি বলছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ?

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, HMPV কোনো নতুন ভাইরাস নয়। এটি ২০০১ সালে প্রথম শনাক্ত করা হয় এবং এটি সাধারণত শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ ঘটায়। এই ভাইরাসের কারণে সর্দি, কাশি, জ্বর, গলা ব্যথা এবং গুরুতর ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। শিশু, প্রবীণ এবং যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল, তাঁদের জন্য এটি বিশেষভাবে বিপজ্জনক।

যদিও HMPV করোনাভাইরাসের মতো ব্যাপক মহামারির রূপ নেবে কি না, তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি, তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। যথাযথ হাইজিন মেনে চলা, মাস্ক পরা, এবং ভিড় এড়ানোর মাধ্যমে এই ভাইরাসের সংক্রমণ রোধ করা সম্ভব। ভারত সরকারের তরফে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সতর্কতা বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তবে নতুন এই ভাইরাসের প্রেক্ষিতে দেশে পুনরায় লকডাউনের সম্ভাবনা সম্পর্কে চিকিৎসকরা বলছেন, করোনা মহামারির অভিজ্ঞতা থেকে মানুষ ও প্রশাসন অনেক কিছু শিখেছে। তাই লকডাউনের মতো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আগে ভাইরাসটির সংক্রমণ ও প্রভাব বিশ্লেষণ করা হবে। তবে, জনগণকে সতর্ক থাকার এবং স্বাস্থ্যের বিষয়ে সচেতন থাকার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সংগ্রহ করে নিন: মাধ্যমিক সাজেশন

বিশ্বজুড়ে বিশেষজ্ঞরা HMPV-এর বিস্তার ও তার প্রভাব নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। আপাতত, জনসচেতনতা ও সতর্কতাই এই ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার প্রধান হাতিয়ার।

HMPV ভাইরাস আসলে কি :

HMPV বাহ হিউমান মেটারনিউম্য ভাইরাস প্রথম সনাক্তকরণ হয়েছিল ২০০১ সালে। এরপর থেকে গোটা বিশ্ব বহু বছর ধরে ছড়িয়ে রয়েছে এই ভাইরাস। এর প্রকোপে বহু মানুষ বিশেষ করে শিশু এবং বৃদ্ধরা আক্রান্ত হয়ে থাকেন। সাধারণত ইমিউনিটি সিস্টেম কমজুরি হলেই এই ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল থাকে।

HMPV ভাইরাস আক্রান্তের লক্ষণ :

HMPV আক্রান্ত ব্যক্তিদের সাধারণ জ্বরের মতোই বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। জ্বরের পাশাপাশি কাশি, সর্দি এমনকি শ্বাসকষ্টের লক্ষণও দেখা দিতে পারে। এই ভাইরাসে আক্রান্তদের রোগ প্রতিরোধকারী ক্ষমতা অত্যন্ত নিম্নমানের হলে, ব্রংকাইটিস বা নিউমোনিয়ার মতো অসুখের কোবলে পড়তে পারেন রোগীরা। এমন কি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। সংক্রমনের তীব্রতা এবং আক্রান্ত ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধকারী ক্ষমতার উপর নির্ভর করে এই রোগ নিবারণের সময়সীমা। যদিও বিভিন্ন গবেষণার দ্বারা একটি জানানো হয়েছে যে সাধারণ জ্বর বা ফ্লু এর মাধ্যমে এই ভাইরাসের সংক্রাম অনাত্মক লক্ষণ প্রকাশ পেতে কম করে দুই থেকে সাত দিন সময় লাগতে পারে (HMPV ভাইরাস আসলে কি)।

হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস (HMPV)-এর লক্ষণসমূহ:

HMPV-এর লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে জ্বর, কাশি, নাক দিয়ে জল পড়া বা নাক বন্ধ হওয়া, শ্বাসকষ্ট, গলা ব্যথা এবং ত্বকে ফুসকুড়ি।
এই ভাইরাসের লক্ষণ সাধারণ ঠান্ডাজ্বরের মতোই দেখতে।

সংগ্রহ করে নিন: মাধ্যমিক সাজেশন

হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাসের লক্ষণ কী কী?

HMPV-এর লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • কাশি।
  • জ্বর।
  • নাক দিয়ে জল পড়া বা নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া।
  • গলা ব্যথা।
  • শ্বাসকষ্ট (ডিসপনিয়া)।
  • ত্বকে ফুসকুড়ি।

হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস সংক্রমণের কারণ কী?

HMPV একটি ভাইরাস দ্বারা সংঘটিত হয়। এটি একটি ক্ষুদ্র জীবাণু, যা নিজের প্রতিলিপি তৈরি করতে আপনার শরীরের কোষ ব্যবহার করে। এই ভাইরাস RSV, হাম (measles) এবং মাম্পসের মতো ভাইরাসের একই গ্রুপের অন্তর্গত।

হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস কীভাবে ছড়ায়?

HMPV সংক্রমিত ব্যক্তির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে অথবা ভাইরাস দ্বারা দূষিত জিনিসপত্র স্পর্শ করার মাধ্যমে ছড়ায়। যেমন:

  • কাশি ও হাঁচি।
  • হাত মেলানো, আলিঙ্গন বা চুম্বন।
  • মোবাইল ফোন, দরজার হাতল, কিবোর্ড বা খেলনার মতো বস্তু স্পর্শ করা।
HMPV ভাইরাস আসলে কি

হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি কারা বেশি?

  • পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুরা (বিশেষত প্রিম্যাচিউর শিশু)।
  • ৬৫ বছরের বেশি বয়স্ক ব্যক্তিরা।
  • যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল (যেমন HIV, ক্যান্সার বা অটোইমিউন ডিসঅর্ডার, অথবা যাঁরা ইমিউন সাপ্রেসিভ ওষুধ গ্রহণ করছেন)।
  • যাঁদের হাঁপানি (Asthma) বা COPD রয়েছে।

হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাসের জটিলতা কী হতে পারে?

কখনও কখনও HMPV গুরুতর জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে, যা হাসপাতালের চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত:

  • ব্রঙ্কিওলাইটিস।
  • ব্রঙ্কাইটিস।
  • নিউমোনিয়া।
  • হাঁপানি বা COPD-এর প্রকোপ বৃদ্ধি।
  • কান ইনফেকশন (অটাইটিস মিডিয়া)।

কীভাবে এর থেকে প্রতিকার পাওয়া যাবে?

  • আক্রান্ত ব্যক্তির শারীরিক ক্ষমতা এবং রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতার উপর নির্ভর করছে এই রোগ সারার চাবিকাঠি। আগে থেকেই বিভিন্ন ধরনের ব্যাধি রয়েছে এমন ব্যক্তিদের এবং শিশুদের এই ভাইরাসের কবলে পড়ার সম্ভাবনা সব থেকে বেশি।
  • উপসর্গ প্রবল দেখা দিলে তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে রোগীকে।
  • ভাইরাসের কবল থেকে বাঁচার জন্য ঘনঘন হাত ধোয়া উচিত।
  • নিয়মিতভাবে স্যানিটাইজার এবং মাস্ক ব্যবহার করা উচিত।
  • হাত দিয়ে অতিরিক্ত নাক-মুখ স্পর্শ না করা।
  • আক্রান্ত হয়েছেন এমন ব্যক্তির থেকে দূরত্ব বজায় রাখা।
  • সর্দি কাশি বা জ্বর হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য পুষ্টিকর খাবার খাওয়া।

ইদানিং কালে ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্র চীনে ১৮ বছর বা তার কম বয়সী ছেলেমেয়েদের মধ্যে এই ভাইরাসের প্রকোপ বেশি পরিমাণে দেখা গিয়েছে। এমনকি ভারতীয় বেশি কিছু নমুনা প্রকাশ্যে এসেছে, যেখানে কম বয়সি শিশুদের আক্রান্ত হবার তথ্য জানা গিয়েছে। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে, এবার কি তাহলে শিশুদের মধ্যেই এই ভাইরাসের দ্বারা মহামারী তৈরি হবে ?

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে এই ভাইরাসের প্রকোপ বহু বছর ধরে রয়েছে সারা বিশ্বে। তাই এই বিষয়ে অযথা আক্রান্ত সৃষ্টি করার কোন মানে নেই। ভারতবর্ষে এখনো পর্যন্ত ভয়াবহ ভাবে HMPV আক্রান্ত ব্যক্তির বা এই ভাইরাস দ্বারা মৃত্যু হয়েছে, এমন খবর পাওয়া যায়নি।

দেশবাসীকে উদ্দেশ্য করে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন যে, কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে চিনে আক্রান্তের সংখ্যার উপর নিয়মিত নজর রাখা হচ্ছে। কলকাতার সহ ভারতবর্ষের একাধিক স্থানে এই ভাইরাসে আক্রান্ত শিশুদের খবর জানা গিয়েছে। তবে কলকাতায় আক্রান্ত ছয় মাসের শিশু ইতিমধ্যেই রোগমুক্ত হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া এগিয়েছে বলে খবর।